ভাজক টিস্যুঃ যে সব টিস্যুর কোষ বিভাজন ক্ষমতা রয়েছে সেগুলােকে ভাজক টিস্যু বলে। উদ্ভিদের বর্ধিষ্ণু অঞ্চলে (যেমন – কান্ড ও মূলের শীর্ষে, কচি পাতায়), পুষ্প, কান্ডমুকুল, পর্বমধ্য ও কান্ডের পরিধিতেও ভাজক টিস্যু থাকে। ভাজক কোষ দিয়ে ভাজক টিস্যু গঠিত হয়৷ এই টিস্যুর কোষগুলো বার বার বিভক্ত হয়, ফলে উদ্ভিদের বৃদ্ধি ঘটে। ভাজক টিস্যু হতেই অন্যান্য স্থায়ী টিস্যু সৃষ্টি হয়৷
ভাজক টিস্যুর বৈশিষ্ট্যঃ
*ভাজক টিস্যুর কোষগুলো আকৃতিতে সমান ব্যাসবিশিষ্ট ও আয়তনে খুবই ছোট;
*অপরিণত কোষে গঠিত ভাজক টিস্যু সর্বদাই বিভাজনক্ষম ও মাইটোসিস পদ্ধতিতে বরাবর বিভাজিত হয়;
*কোষগুলো সাধারণত আয়তাকার, ডিম্বাকার, পঞ্চভুজ বা ষড়ভুজাকার হয়;
*কোষগুলো পেকটিন ও সেলুলোজ নির্মিত এবং পাতলা এবং এই কোষে সাধারণত সেকেন্ডারি কোষ প্রাচীর থাকে না;
*কোষে ঘন দানাদার সাইটোপ্লাজম ও বড় আকারের নিউক্লিয়াস থাকে;
*কোষে সাধারণত কোনো কোষ গহ্বর থাকে না থাকলেও আকারে ক্ষুদ্র ও সংখ্যায় অগণিত যাদের প্রো ভ্যাকুওল বলে;
*কোষগুলো আকারে ছোট এবং দৈর্ঘ্য প্রস্থের প্রায় সমান;
*কোষে বিদ্যমান প্লাস্টিড আদি প্রকৃতির ( প্রো-প্লাস্টিড);
*এ টিস্যু বিপাক হার বেশি বলে কোষে কোনো প্রকার বর্জ্য পদার্থ, সঞ্চিত খাদ্য ও ক্ষরিত পদার্থ থাকে না;
*এই টিস্যু সাধারণত মূল ও কান্ডের অগ্রভাগে অবস্থান করে;
*ভাজক কলার কোষগুলোর মাঝে সাধারণত কোনো আন্তঃকোষীয় ফাঁক থাকে না৷
ভাজক টিস্যুর কাজঃ
শীর্ষস্থ ভাজক টিস্যুর বিভাজনের মাধ্যমে উদ্ভিদ দৈর্ঘ্যে বৃদ্ধি পায়। এতে ছােট গাছ ক্রমে উঁচু ও লম্বা হয়। পার্শ্বীয় ভাজক টিস্যুর বিভাজনের ফলে উদ্ভিদের ব্যাস বৃদ্ধি পায়। এতে সরু কাণ্ড ক্ৰমে মােটা হয়। ভাজক টিস্যু থেকে স্থায়ী টিস্যুর সৃষ্টি হয়।
আরও দেখুন...